মোঃ শেখ সাদী মাছুম: আরবি হিজরি সনের প্রথম মাস হচ্ছে মহররম মাস। এ মাসের ১০ তারিখকে আশুরার দিন বলা হয়। ইসলামের ইতিহাসে এই দিনের তাৎপর্য সুদূরপ্রসারি। এদিনে আল্লাহ পাক হযরত আদম (আঃ) এবং হযরত হাওয়া(আঃ)কে সৃষ্টি করেন। হযরত ইব্রাহিম (আঃ)সহ এদিনে ২০০০ হাজার নবী রাসুল দুনিয়ায় তশরিফ আনেন। এ দিবসে হযরত আদম(আঃ) সহ অন্যান্য নবীদের উপর রোজা ফরজ ছিল কেননা হযরত আদম (আঃ)এর দোয়া কবুল হয়েছিল এদিনেই। আল্লাহ পাক এদিনে হযরত ইদ্রিস (আঃ) কে উচ্চ মর্যাদায় আসীন করেন,হযরত ইব্রাহিম (আঃ) কে নিক্ষিপ্ত অগ্নিকান্ডকে ফুলের বাগানে পরিণত করেন। হযরত নূহ(আঃ) কিস্তি থেকে জমিনে তশরীফ নেন, হযরত মুছা (আঃ) এর উপর তৌরাত কিতাব নাজিল হয়, হযরত ইউসুফ (আঃ) কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করেন,হযরত ইয়াকুব (আঃ)এর হারানো চোখের জ্যোতি ফিরে পান,হযরত ইউনুস (আঃ) মাছের পেট থেকে মুক্তি পান, হযরত ঈসা ( আঃ)ও জন্ম গ্রহন করেন এই দিনেই। মহান আল্লাহ পাক হযরত ইদ্রিস (আঃ)কে স্বশরীরে আছমানে উঠিয়ে নেন,হযরত আইয়ুব (আঃ) রোগ থেকে মুক্তি লাভ করেন,হযরত সুলাইমান (আঃ) পুনরায় রাজত্ব ফিরে পান এবং লাওহে মাহফুজ ও যাবতীয় সৃষ্টি জীবের রূহ সৃষ্টিসহ অনেক তাৎপর্যপূর্ণ বহুল ঘটনা এদিনে সংঘটিত হয়। এই দিনে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর সাথে দুনিয়ায় রহমত নিয়ে হযরত জিবরাইল (আঃ) মোলাকাত করেন। হযরত মা খাদিজাতুল কোবরা (রাঃ) এর সাথে দয়াল নবী হযরত মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সাঃ)এর শাদী মোবারক সম্পন্ন হয় এদিনে। এতদ ঘটনাবলীর জন্য দিনটি অনেক তাৎপর্যপূর্ণ। পরবর্তীতে ইসলামের নবী সাইয়্যেদুল আম্বিয়া হযরত মুহাম্মদ (সঃ)এর কলিজার টুকরা দৌহিত্র হযরত মা ফাতিমা (রাঃ)এর আদরের দুলাল ও হযরত মাওলা আলী (রাঃ)এর স্নেহের তনয় মুমিনের ঈমানের অপরিহার্য অংশ এবং পাক পাঞ্জাতনের অন্যতম সদস্য হযরত ইমাম হুসাইন (রাঃ) কারবালার প্রান্তরে সত্য ইসলামকে টিকিয়ে রাখার জন্য এবং বাতিলের বিরুদ্ধে জিহাদ করে শহীদ হন। অতঃপর এই দিনটি মুসলমানদের জন্য জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পরিগণিত হয়। এছাড়াও এই দিনেই আল্লাহ পাক পরোয়ার আরশে সমাসীন হন,সর্বশেষে এই দিনেই পৃথিবীর ধ্বংস হবে। এই দিনের প্রতি নবীজি গুরুত্ব দিয়ে রোযা রাখার শিক্ষা দেন এবং নবীজি নিজেও রোযা রাখতেন। হুজুর (সাঃ) ফরমান আমি মনে করি, আশুরার রোযার বরকতে আল্লাহ পাক বিগত বৎসরের গোনাহ মাফ করে দেন।(মুসলিম শরীফ) সূত্র: লেখক মাওলানা খাজা মুহাম্মদ ছাইফুদ্দীন এনায়েতপুরী শম্ভুগঞ্জী (র)।
