মোঃ আব্দুল লতিফ, গৌরীপুর,ময়মনসিংহ।
ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা গাভী পালন করে অনেকেই স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন।
ময়মনসিংহের গৌরীপুরে বেসরকারি ঋণদান সংস্থা আশার ৮৫জন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা গাভী পালন করে সময়ের বিবর্তনে অনেকেই স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন।
গৌরীপুর অঞ্চল ঘুরে গাভী পালনকারীদের সাথে কথা বলে এমনটিই জানা গেছে। অনেক গরীব ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষজন আশা থেকে ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে বাজার থেকে ছোট ছোট গরু ক্রয় করে বাড়িতে লালন পালন করছেন। বর্তমান বাজারে গরুর মূল্য ভাল থাকায় গবাদিপশু পালনকারীরা লাভবান হচ্ছেন। অনেকে গাভী পালন করেও লাভবান হচ্ছেন। কারণ গাভী থেকে দুধ বিক্রি সহ গাভীর বাচ্চাটি থেকে আরো বেশি লাভবান হওয়া যায়। অনেকে গাভী পালন করে নিজেদের দুধের চাহিদা মিটিয়ে কিছু বাজারে বিক্রিও করছেন।
এই ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা গাভী পালনকারীদের আরো দক্ষ করে গড়ে তুলতে আশার উদ্যোগে নিয়মিত ভাবে প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় ময়মনসিংহের গৌরীপুর অঞ্চলে গত রোববার স্থানীয় কৃষি সম্প্রাসারণ হল রুমে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের নিয়ে দিনব্যাপী এক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ২০জন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা গাভী পালনকারী অংশ গ্রহন করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন আশা ময়মনসিংহ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান শ্যামল কুমার ধর, আশা’র জেলা ম্যানেজার একে আজাদ, আঞ্চলিক ম্যানেজার মোঃ মহসীন খান, গৌরীপুর শাখা ম্যানেজার নুর আলম, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মাইজবাগ শাখার ম্যানেজার একে এম নূরুল আমীন প্রমুখ। গাভীর সঠিক পরিচর্যার উপর বিস্তর প্রশিক্ষণ পরিচালনা করেন গৌরীপুর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ আব্দুল করিম।
প্রশিক্ষণে অংশগ্রহনকারী গাভী পালনকারীরা বলেন, বর্তমানে এ অঞ্চলে বেশি ঘাস পাওয়া যায় না। অনেক আগে অঞ্চল গুলোতে প্রচুর পরিমাণে ঘাস থাকতো।
তখন মানুষজন তাদের জমিগুলো একটি ফসল আবাদ করলে ফেলে রাখতো। এখন আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির যুগে মানুষজন কোন জমি ফেলে রাখে না। কেউ কেউ একটি জমিতে বছরে তিনটি ফসল উৎপাদন করছেন। এ অঞ্চলের একমাত্র গবাদি পশুর খাদ্য হয়ে দাড়িয়েছে ধানের খড়। বর্তমানে খড়ের বাজার মুল্য বেশী।
এ ব্যাপারে গৌরীপুর পৌর এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মোতালিব জানান, তিনি বর্তমানে আশা থেকে ঋণ নিয়ে ৫টি গাভী পালন করছেন। দুধ বিক্রি করে তিনি এখন পরিবার পরিজন নিয়ে ভাল আছেন। আরো কথা হয় লামাপাড়া গ্রামের ইলিয়াসের সাথে।
তিনি জানান, বর্তমানে আশার সহযোগীতায় তার এখন ৪টি গাভী আছে। আঞ্চলিক ম্যানেজার মোঃ মহসীন খান জানান, আশার গৌরীপুর অঞ্চলের ৮৫ জন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তার মাঝে প্রায় দেড়কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। যাদের প্রত্যেকের এখন ৩ থেকে ৫টি করে গাভী রয়েছে।
এ ব্যাপারে গৌরীপুর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ আব্দুল করিম জানান, অনেক খামারী আমাদের সাথে যোগাযোগ করেন। ওষুধ পত্র সহ বিভিন্ন রোগের ভ্যাকসিন নিয়ে যান, আমরা গবাদিপশু লালন ও পালনকারীদের বিভিন্ন ধরণের পরামর্শ দিয়ে থাকি।
তিনি বলেন গবাদিপশু পালন একটি লাভজনক ব্যবসা। সরকারি ও বেসরকারী এনজিওগুলো যদি ভুত্তকী সহ ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করতে পারে এবং ও পযাপ্ত ওষুধ সরঞ্জামাদির ব্যবস্থা করতে পারেন তাহলে গবাদিপশু ও গাভী পালনে মানুষজন আরো আগ্রহী হয়ে উঠবে।