সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি: জেলার আদিগন্ত মাঠ জুড়ে চির সবুজের বুকে কাঁচা হলুদের আলপনা। সরিষা ফুলের নান্দনিক শোভায় শোভিত যেনো প্রকৃতির মঞ্চ। বিস্তীর্ণ মাঠে চাষ করা হয়েছে সরিষা। যেদিকে দু’চোখ যায় মাঠে শুধু সরিষা ফুলের সমারোহ। সরিষার ক্ষেত হলুদ ফুলের গন্ধে যেনো দিগন্ত রাঙিয়ে দিয়েছে। মাঠের পর মাঠ হলুদ ফুলের হাসিতে ভরে তুলেছে প্রকৃতির চিত্র। জেলার সাতটি উপজেলার ১২ হাজার হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছে সরিষা। হলুদ সরিষা ফুলের শোভিত প্রকৃতিতে কৃষকের প্রাণ জুড়িয়ে যায়। সরিষা ফুলের মন মাতানো গন্ধে সবাইকে আকৃষ্ট করে। সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলায় এবছর সরিষার আবাদ হয়েছে চোখে পড়ার মতো।
এবছর কলারোয়া উপজেলায় হলুদ ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে সরিষার মাঠ। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর সরিষার বাম্পার ফলন হবে-এমনটাই আশা করছেন চাষীরা।
কলারোয়া উপজেলার খোরদো গ্রামের কৃষক হাফিজুর রহমান জানান, ভালো ফসল হবে এমনটাই আশা করছি। তবে কৃষকদের সরিষা চাষে আগ্রহ সৃষ্টির জন্য উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সার্বক্ষনিক আমাদের পরামর্শ দিচ্ছেন বলে জানান কৃষকরা। তাদের মতে, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যদি কৃষকদের ঠিক মতো এভাবে দেখাশোনা করে তাহলে অনেক অনাবাদি জমিতে আরও বেশি সবজিসহ সরিষা চাষ করা সম্ভব।
কৃষক মনজেল হোসেন বলেন, সরিষা চাষে খুব একটা ব্যয়ও করতে হয় না। সরিষার জমিতে খুব বেশি চাষ দিতে হয় না। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতা এবং সরিষার ন্যায্যমূল্য পেলে এ অঞ্চলের কৃষকরা ধান চাষের পাশাপাশি সরিষা চাষে আরও বেশি এগিয়ে আসবে।
কলারোয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মহাসীন আলী জানান, মাত্র ১০ শতাংশ জমিতে সরিষা চাষ করলে ৬-৭ জনের পরিবারের এক বছরের তেলের চাহিদা মিটে যায়। উপজেলায় এবার সরিষার ফলন বেশ ভালো হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। বাজারে সরিষার দাম ভালো পাওয়া গেলে কৃষকের লাভের অংকটা একটু বেশি হবে। তিনি আরও বলেন, জমিতে বিঘায় ৪ মণ কোনো কোনো জমিতে ৫ মণ সরিষা পাওয়া যাবে। এবার দাম ভালো পেলে আগামীতেও কৃষকেরা সরিষা চাষে অরো আগ্রহী হবেন।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা তামান্না তাছনীম জানান, বারি সরিষা-১৪ ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকরা আগ্রহী হয়ে উঠছে। এর তেলের গুণাগত মানও অনেক ভালো। কৃষক তার উৎপাদিত সরিষার ভাল দাম পাচ্ছেন বলেও জানান কৃষি বিভাগের ওই কর্মকর্তা।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সাতক্ষীরায় সরিষার চাষে ভালো ফলনের আসা করছেন কৃষকরা। ফলে দিনে দিনে লাভজনক ফসল হিসেবে সরিষার কদর বেড়ে চলেছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. নূরুল ইসলাম বলেন, অল্প সময়ে উচ্চ ফলনশীল সরিষা চাষে অধিক ফলন পাওয়ায় কৃষকরা সরিষা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। এবছর ১২ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
