হোসাইন আহমেদ হাসান,দুর্গাপুর(নেত্রকোনা)প্রতিনিধি:
নেত্রকোনার দুর্গাপুরে বেপরোয়া ট্রাক্টর চলাচলে পৌর শহরের প্রায় সব রাস্তা গুলোর অবস্থা করুন দশায় পরিণত হয়েছে। লাইসেন্স বিহীন ট্রাক্টর দিয়ে সোমেশ্বরি নদী থেকে ভিজাবালু পরিবহনে সড়র’টি সড়ক কাঁদায় পরিনত হচ্ছে। বর্তমানে বর্ষা মৌসুম না হলেও শহরের প্রতিটি রাস্তায় বর্ষা মৌসুমের মতোই জমে আছে পানি আর কাঁদা। অনিয়মতান্ত্রিত ট্রাক, ট্রাক্টর ও লড়ি গাড়ী চলাচল করায় পৌরবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। জনমনে চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে।
এ নিয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখাগেছ, দুর্গাপুর তেরীবাজার ও আত্রাইখালী ঘাট থেকে পৌরশহর রাস্তা দিয়ে ভিজা বালুবাহী ট্রাক্টর চলাচলে কাঁদায় পরিনত হয়েছে শহরের সড়ক গুলো, চরম হুমকীতে জীবন-যাপন করছে স্থানীয়রা। কলেজ রোড এলাকার আদর্শবিদ্যাপিঠ দি চাইল্ড লার্নিং হোমস্, সুসঙ্গ আদর্শ বিদ্যানিকেতন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সুসঙ্গ সরকারী মহাবিদ্যালয়, দুর্গাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুর্গাপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজ এর শিক্ষার্থীরা দিনের বেলায় বেপরোয়া ট্রাক, ট্রাক্টর ও লড়ি চলাচল এবং নদী থেকে ভিজাবালু পরিবহন বন্ধে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকবার রাস্তায় মিছিল করা সহ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, পৌরশহরের উকিলপাড়া, কলেজ রোড, উপজেলা চত্বর, হাসপাতাল এলাকার রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৪ থেকে ৫ শত ট্রাক্টর চলাচলে রাস্তার অবস্থা করুণ দশায় পরিণত হয়েছে। রাস্তা পার হওয়া তো দূরের কথা ঐ রাস্তা দিয়ে পথচারীদের চলাচল করাই কঠিন হয়ে পড়েছে। ঘন্টার পর ঘন্টা জ্যাম লেগে থাকে ঐ রাস্তায়। এতেকরে নানা ধরণের প্রতিবন্ধকতা তৈরী হচ্ছে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের। রাস্তায় প্রতিনিয়ত চলাচলের বিঘ্ন ঘটায়, শিশুরা স্কুলে যেতে ভয় পাচ্ছে। বেলতলী এলাকার অনেক কাপড়ের দোকানী তাঁদের ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন। হাসপাতাল এলাকায় ঐতিহ্যবাহী দি চাইল্ড প্রিপারেটরী স্কুলের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও কমে গেছে। মাঝে মধ্যে অবৈধ লড়ি চলাচল বন্ধে উপজেলা প্রশাসন মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করলেও তা যথেষ্ট নয় বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
প্রাণের রাস্তা বাঁচাতে প্রয়োজনে বালু মহলের ইজারা বন্ধ করণ সহ এ সমস্যা সমাধানে প্রশাসনের কঠোর ভূমিকা চান স্থানীয় নাগরিক সমাজ, স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় অভিভাবকবৃন্দ। খোঁজনিয়ে জানাগেছে, স্থানীয় একটি সিন্ডিকেট চক্র প্রভাবশালী মহলের যোগসাজসে অবৈধ লাইসেন্স বিহীন লড়িগাড়ী অপ্রাপ্তবয়স্ক চালক দিয়ে বালু পরিবহন করাচ্ছে প্রতিনিয়ত। যারফলে ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। ২০১৯ সনে শুধুমাত্র লড়িগাড়ী দিয়ে বিভিন্ন এলাকার শিক্ষার্থী হত্যা করা হয়েছে ১১জন, ট্রাকে পথচারী হত্যা করেছে ৯জন।
এ নিয়ে পৌর মেয়র আলহাজ মাওলানা আব্দুস সালাম বলেন, দুর্গাপুর পৌরসভা সহ আশপাশের ইজারাকৃত এলাকা থেকে ভিজাবালু পরিবহন নিষেধ করা হয়েছে। পৌরবাসীর চলাচলের সুবিধার্থে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত রাস্তায় লড়ি চলাচল বন্ধেরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবুও প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে কিছু গাড়ী চলাচল করছে। এ অবস্থা নিরসনে পৌর প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।