মোঃ আব্দুল লতিফঃ( গৌরীপুর প্রতিনিধি) ময়মনসিংহের ত্রিশালে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ছয়জনের একজন জেসমিন আক্তার (২৮)। তিনি উপজেলার কাঁঠাল ইউনিয়নের হদ্দের ভিটা গ্রামের মাহমুদুল হাসানের স্ত্রী। তার ছয়মাসের একটি মেয়ে আছে। সংসারে সহযোগিতার জন্য তিনমাস আগে তিনি যোগ দেন গার্মেন্টসে। প্রতিদিনের মতো সেদিনও সকালে মেয়েকে দাদি হালিমা খাতুনের কাছে রেখে কাজে গিয়েছিলেন জেসমিন। কিন্তু তার আর বাড়ি ফেরা হলো না।
জেসমিনের স্বামী মাহমুদুল হাসান বলেন, অভাব-অনটনের সংসার আমাদের। সকালে আমাকে ডেকে ঘুম থেকে তুলে কাজে যায় জেসমিন। এসময় আমি তাকে আজ কাজে যেতে মানা করেছিলাম। কিন্তু জেসমিন বলেছিল, আজ বেতন দিতে পারে, বিকাল ৫টার আগেই চলে আসবো। এই কথা বলে সে বের হয়ে যায়। কিন্তু সে আইলো লাশ অইয়া। আমার দুধের মাইয়াডার অহন কি অইবো, ও কেমনে বাঁচবো মা ছাড়া, বলেই সে কান্নায় ভেঙে পড়ে।
এর আগে বুধবার (১১ অক্টোবর) সকাল পৌনে ৮টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে উপজেলার চেলেরঘাট এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস জানায়, শেরপুর থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী একটি ত্রিশাল উপজেলার চেলেরঘাট আসতেই চাকা বিকল হয়ে যায়। পরে বাসটি রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে চাকা সারানোর চেষ্টা করে। এরই মধ্যে এই বাসের কয়েকজন যাত্রী অন্য আরেকটি বাসকে সিগনাল দিয়ে দাঁড় করিয়ে চলে যেতে চায়। এসময় অপর একটি বাস এসে সিগনাল দিয়ে দাঁড় করানো যাত্রী ও বাসে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলে তিনজনের মৃত্যু হয়। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাস্তায় একজনের ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও দুইজনের মৃত্যু হয়।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্তব্যরত সদর থানার উপ-পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, হাসপাতালে আনার পর দুজন মারা গেছেন। বর্তমানে ১৩ জন চিকিৎসাধীন।
এবিষয়ে ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঈন উদ্দিন বলেন, বাসচাপায় ঘটনাস্থলেই তিনজন নিহত হন। এরপর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন এবং ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে আরও দুজনের মৃত্যু হয়। নিহতদের পরিচয় জানতে জেলা পিবিআই পুলিশের সহায়তা নেওয়া হচ্ছে। এই ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।