স্টাফ রিপোর্টার: প্রতারনার মামলার সূত্র ধরে ০৩/০৮/২৩ ইং তারিখে বিকাল ২ ঘটিকায় ঢাকার মধ্য বাড্ডার গোদারাঘাট এলাকা হতে একজন সহযোগীসহ মূল প্রতারক মোঃ সজিব রহমানকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই, ময়মনসিংহ।
জানা যায় অত্র মামলার বাদী মোঃ হুমায়ন কবির, পিতা-মৃত আবুল কাশেম, সাং-পাঁচপাড়া এ/পি ত্রিশাল ভাটিপাড়া, ৫নং ওয়ার্ড ত্রিশাল পৌরসভা, ত্রিশাল, ময়মনসিংহ ২০০১ সালে সৌদি আরবে নিজস্ব ফুড ও লন্ড্রি ব্রবসা শুরু করে স্বচ্ছলতার সাথে দিন যাপন করে আসছিলেন। ঘটনার অনুমান নয় মাস পূর্বে আসামী মোঃ সজিব রহমান (২৪), পিতা-আব্দুস ছাত্তার প্রমানিক, সাং-দেওলা (সহলিয়া), থানা-রানীনগর, জেলা-নওগাঁ বাদী হুমায়নের দোকানে কাজ নেয়। অনুমান পাঁচ মাস কাজ করার পর সজিব প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে কানাডায় যাওয়ার কিছু কাগজ পত্র দেখিয়ে বাদীকে বলে সে শীঘ্রই কানাডা যাচ্ছে।
বাদী যদি তাকে টাকা দেয় তাহলে সে বাদী হুমায়নকেও স্বপরিবারে কানাডায় নিয়ে যেতে পারবে। আসামী সজিব এর কথায় প্রলুব্ধ হয়ে বাদী হুমায়ন তাকে বিভিন্ন সময়ে ব্যাংক, বিকাশ কখনো নগদ অর্থ দিতে থাকে। এক পর্যায়ে সজিবের প্রতারণার শিকারে নিঃস্ব হয়ে বাদী তার সৌদি আরবের ব্যবসাও বন্ধ করে দেশে চলে আসে। গত ০৮/০৩/২১ তারিখ হতে ২৮/০৯ তারিখ পর্যন্ত বাদী হুমায়ন বিভিন্ন সময়ে ব্যাংক, বিকাশ ও নগদ অর্থ প্রদানের মাধ্যমে সর্বমোট ১,৯৭,০০,০০০/- (এক কোটি সাতানব্বই লক্ষ) টাকা আসামী সজিবকে প্রদান করে।
এরপর হতেই চতুর ও ধূর্ত আসামী সজিব তার ফোন নম্বর বন্ধ করে আত্মগোপন করে। উপায়ন্তর না দেখে বাদী হুমায়ন ত্রিশাল থানার মামলা নং-০৯, তাং-১৪/১০/২১, ধারা-৪০৬/৪২০ দঃ বিঃ দায়ের করেন। প্রথমে থানা পুলিশ পরে সিআইডি মামলাটি তদন্তকালে দীর্ঘ দিন অতিবাহিত হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত মামলার তদন্তভার পিবিআই, ময়মনসিংহ জেলাকে প্রদান করেন।
অ্যাডিশনাল আইজিপি, পিবিআই জনাব বনজ কুমার মজুমদার, বিপিএম (বার), পিপিএম এর তত্ত্বাবধানে পিবিআই, ময়মনসিংহ ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার জনাব মোঃ রকিবুল আক্তার এর সার্বিক সহযোগীতায় তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) জনাব সালাহ উদ্দিন আহমেদ মামলার তদন্ত শুরু করেন।
পুলিশ সুপার জনাব মোঃ রকিবুল আক্তার এর দিক নির্দেশনায় পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) জনাব সালাহ উদ্দিন আহমেদ গত ১৮/০৩/২০২৩ তারিখে মামলার তদন্ত শুরু করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কয়েক মাসের মধ্যে আত্মগোপনে থাকা আসামী সজিবের অবস্থান শনাক্ত করতে সক্ষম হন এবং অদ্য ০৩/০৮/২৩ তারিখ অনুমান ০২.০০ ঘটিকায় ঢাকার মধ্য বাড্ডার গোদারাঘাট এলাকা হতে প্রতারণার সহযোগী আসামী সোহেল রানাসহ প্রতারক মোঃ সজিব রহমানকে গ্রেফতার করেন।
এ বিষয়ে পিবিআই, ময়মনসিংহ জেলার পুলিশ সুপার জনাব মোঃ রকিবুল আক্তার বলেন, এটি ছিল প্রতারণার চাঞ্চল্যকর ঘটনার। আসামী সজিব ছিল অত্যন্ত ধূর্ত। ঘটনার পরেই সে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেয়। এমনকি সে তার পরিবারের লোকজনদের সাথেও যোগাযোগ করত না। ধূর্ত সজিব লোকচক্ষুর অন্তরালে নতুনভাবে জীবন যাপন করতে থাকে।
মামলার তদন্তভার গ্রহণের পর হতেই প্রতারক সজিব রহমানকে গ্রেফতারে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। এক পর্যায়ে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অদ্য ০৩/০৮/২৩ তারিখ অনুমান ০২.০০ ঘটিকায় ঢাকার মধ্য বাড্ডার গোদারাঘাট এলাকা হতে সহযোগী আসামী সোহেল রানাসহ প্রতারক মোঃ সজিব রহমানকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পরে একই দিন গ্রেফতারকৃত সহযোগী আসামী সোহেল রানা ও প্রতারক সজিব রহমানকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। প্রতারক সজিব রহমান ফৌঃকাঃবিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক নিজেকে জড়িয়ে ঘটনার বিস্তারিত উল্লেখ করে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।
পিবিআই, ময়মনসিংহ জেলার সকল অফিসার ও ফোর্সের আন্তরিকতা, নিরলস প্রচেষ্টা ও পিবিআই হেডকোয়ার্টার্সের সহযোগীতায় মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই সুচতুর ও ধূর্ত প্রতারক সবিজ রহমানকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়।