স্টাফ রিপোর্টারঃ গতকাল মঙ্গলবার (৩০ মে ২০২৩) তারিখ রাত অনুমান ১০ টা ১৫ মিনিটের সময় র্যাব – ১৪, সিপিএসসি, টিটিসি, ময়মনসিংহ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ময়মনসিংহ জেলার কোতোয়ালী মডেল থানা এলাকা হতে অপহরণসহ শিশু ধর্ষণ মামলার যাবজ্জীবন এবং তৎসহ ১৪ বছরের সশ্রম দন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামী আ. হামিদ (৪০) কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামী নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলার বাড়েঙ্গা গ্রামের হাফিজ উদ্দিনের ছেলে।
গ্রেফতারকৃত আসামী আ. হামিদ বাড়েঙ্গা গ্রামে ঘটনার কয়েক বছর পূর্বে ভিকটিম রুজিনা বেগম (১৩) এর বড় বোনকে বিবাহ করে। ভিকটিমের বড় বোনকে বিবাহ করে সংসার করা অবস্থায় গত ৪ আগষ্ট ২০০৩ খ্রীষ্টাব্দে গ্রেফতারকৃত আসামী তার শ্যালিকা ভিকটিম রুজিনা বেগমকে স্কুল থেকে বাড়ীতে আনতে যায়। কিন্তু বাড়ীতে নিয়ে না এসে কৌশলে অন্য গাড়ীতে উঠিয়ে ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার একটি পরিত্যক্ত বাড়ীতে নিয়ে যায়। সেখানে ভিকটিমকে তিন দিন আঠক রাখে এবং একাধিক বার জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।
তিন দিন পর ভিকটিমকে সেখানে আহত অবস্থায় রেখে গ্রেফতারকৃত আসামী বাড়ীতে চলে আসে। পরবর্তীতে, ভিকটিম রুজিনা বেগম স্থানীয় লোকদের সহায়তায় তার বাড়ীতে এসে পরিবারের লোকজনকে বড় বোন জামাই কর্তৃক অপহরণ হয়ে ব্রাহ্মনবাড়ীয়ার একটি অজ্ঞাত বাড়ীতে তিনদিন আঠক রেখে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণের বিষয়টি অবগত করে।
উক্ত ঘটনায় নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা থানা এলাকাসহ সারা দেশে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে, ভিকটিমের মা বাদী হয়ে শ্যালিকাকে অপহরণ করে ধর্ষণ করার ঘটনায় গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে নেত্রকোণা জেলার পূর্বধলা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। উক্ত ঘটনার পর হতেই দীর্ঘ ২০ বছর যাবৎ আসামী তার আসল নাম-ঠিকানা পরিবর্তন করে জাতীয় পরিচয়পত্রে ছদ্মনাম ধারন করে ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা থানায় ছদ্মবেশে পালিয়ে ছিল।
পরবর্তীতে এই মামলায় সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে আসামী আ. হামিদ-এর বিরুদ্ধে বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন, নেত্রকোণা ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী/২০০৩ এর ৯ (১) ধারার অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত গ্রেফতারকৃত আসামী আ. হামিদকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং অপহরণ করার অপরাধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭ ধারায় অতিরিক্ত আরো ১৪ বছরের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। গ্রেফতারকৃত আসামীকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করার নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়।